মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট, ২০১২

ইলাইজা ইম্পে [Sir Impay Elijah]


ইলাইজা ইম্পে [Sir Impay Elijah]
জন্ম নেন ১৭৩২ সালেতাঁকে পাঠানো হয়েছিল ভারতের সুপ্রীপ কোর্টের বিচারপতি করেনিম্ন আদালত থেকে আসা বিচারগুলো তাঁর কাছে এসেই শেষ হত অবিলম্বেসুতরাং ভারতের বৃটিশ বিরোধী ব্যক্তি বা বিপ্লবীদের, বিশেষ করে নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা আছে এই রকম আসামীদের, কেমন করে যাবজ্জীবন ও ফাঁসি দেওয়া যায় সে বিষয়ে তিনি ছিলেন অভিজ্ঞ বিচারকঅনেক ফাঁসির রায়প্রাপ্ত আসামীকে বাহ্যতঃ করুণা প্রদর্শন করে যাবজ্জীবনের কারাদন্ড দিতেনঅবশ্য কারাগারে তাদের মৃত্যুই ঘটানো হতো আর রটিয়ে দেয়া হতো হৃদরোগের মৃত্যু বলে১৭৭৫ খৃষ্টাব্দে মহারাজ নন্দকুমারকে জালিয়াতির অভিযোগে ফাঁসির দন্ড দিয়েছিলেন ঐ বিচারপতি মিঃ ইম্পেঅথচ সত্যিকথা এটাই, যে অভিযোগের তাঁর ফাঁসি হয়েছিল সেই অভিযোগটি ছিল মিথ্যাঐ ব্রাহ্মণ নন্দকুমারের ফাঁসির পর বহু হিন্দুর ইংরেজ প্রীতিতে ভাটা সৃষ্টি হয়বিলেত থেকে খবর এল তাঁকে দেশে ফিরে যেতে হবে, তাঁর বিচার হবে সেখানেআমাদের ভারতের রাজা, মাহারাজা, জমিদার, এমনকি অনেক আশ্রমের সাধুজীরা বিলেতে গাদাগাদা চিঠি লিখলেন যাতে ন্যায়াধিরাজ মহান বিচারপতির শাস্তি না হয়আর তাই ইংরেজ শাসক মিঃ ইম্পেকে ভূষিত করেছিলেন স্যারউপাধিতে১৮০৯ খৃষ্টাব্দে তিনি বিদায় নেন পৃথিবী থেকে

অয়ারেন হেস্টিংস [Warren Hastings]

অয়ারেন হেস্টিংস [Warren Hastings]
১৭৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি তাঁকেও শাসন শোষণের ট্রেনিং দিয়ে ভারত বর্ষে পাঠানো হয়েছিল ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির কেরানী করে এখানে এসে তিনি দানবীয় পদ্ধতিতে ভারতবাসীর উপর অত্যাচারের রোলার চালান।এবং এভাবেই তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তথা বৃটিশ সরকারকে মুগ্ধ করেনযার সাধুবাদ  হিসেবে তিনি পান সারা ভারতের গভর্নর জেনারেলের পদদেশীয় নেতাদের সহযোগিতায় রাজা চৈত সিংয়ের বাড়িতে বিশেষ করে তাঁদের মহিলাদের উপর অশ্লীল ও সীমাহীন অত্যাচার করেছিলেন তিনিআর অযোধ্যার বেগম ও তাঁর বাড়ির মহিলাদের প্রতিও যথেচ্ছ অত্যাচার করে তিনি চমক লাগিয়ে দিয়েছিলেন সরকারকেতাঁর সময়ে ভারতে সুপ্রীম কোর্ট ও চিফ জাস্টিসের পদ গঠিত হয়এঁর সময়েই তৈরী হয়েছিল এসিয়াটিক সোসাইটিযাই হোক, হেস্টিংসের আমলেই মুদ্রণ যন্ত্রেরও প্রচলন হয় এই দেশেমূল উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় ভাষায় খৃষ্টান ধর্মের প্রচার ও প্রভাব সৃষ্টি করাএত করেও হেস্টিংসের দুর্নামে সোচ্চার হয়ে উঠলো ভারতবর্ষসদাশয় ইংরেজ সরকার সুবিচারের নামে তাঁকে সসম্মানে ইংলণ্ডে ডেকে নিয়ে আরম্ভ করলো তাঁর অত্যাচারের বিচারবৃটিশের মহামান্য বিচারকদের সুবিচারে তিনি প্রমাণিত হলেন একেবারে নির্দোষতাঁর মৃত্যু হয় ১৮১৮-তে

সোমবার, ২৭ আগস্ট, ২০১২

লর্ড ক্লাইভ [Lord clive]


১৭২৫ এ জন্মগ্রহণ করেনতাঁকে ভারতে বৃটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় ১৭৪২ সালে বিলেত থেকে তাঁকে মাদ্রাজে পাঠানো হয়েছিল১৭৪৮-এ সৈন্য বিভাগের কর্মচারি হয়েছিলেন তিনিসেই সময় ভারতে ফরাসিদেরও প্রভাব ছিল যথেষ্টইংরেজ ও ফরাসিদের মূল লক্ষ্য ছিল একইআর্কটের মুসলিম নবাবের মৃত্যু হলে ফরাসীরা প্রতিনিধি বানান চাঁদ সাহেবকে, অন্যদিকে ইংরেজদের মনোনীত প্রতিনিধি ছিলেন মহম্মদ আলীএঁদের মধ্যে শুরু হয়ে গেল প্রচণ্ড লড়াইমিঃ ক্লাইভ মহম্মদ আলীর পক্ষে লড়তে বৃটিশ সৈন্য নিয়ে আর্কটে আক্রমণ করে ফরাসিদেরকে পরাজিত করলেন ভারতে ফ্রান্সের রাজনৈতিক পতন শুরু ওখানেই আর্কটবাসী মনে করলেন মুসলমান নবাবের আর্কট ইংলন্ডের হাতেই চলে গেল সারা ভারতের রাজনৈতিক নেতারাও ভাবছিলেন ঐ এক-ই কথাচতুর ক্লাইভ আর্কট দখল করে মহম্মদ আলীকে সিংহাসনে বসিয়ে চমক লাগিয়ে অবাক করেন সবাইকেবিশেষ করে ভারতের মুসলিম জাতি ক্লাইভের উদারতায় অভিভূত হয়ে গিয়েছিল তখন কারও পক্ষে এই কৌশল টের করা সম্ভব হয়নিএরপরে আর কিছু ক্ষেত্রে ক্লাইভ ফরাসিদের পরাজিত করে ফ্রান্সের স্বপ্নকে একেবারে ধূলিসাৎ করে দেনএইবার ক্লাইভ বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলার দিকে নজর দিলেন তিনি ঘাঁটি গাড়লেন চন্দনগরেসময়টা ঠিক এমন ছিল যখন সিরাজকে পদচ্যুত করার  বড় রকমের একট ষড়যন্ত্র চলছিলএই দুর্যোগকে ক্লাইভ সুযোগ মনে করে ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়ে দিলেন সিরাজ বিরোধী ষড়যন্ত্রে যাঁরা প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন তারা হচ্ছেন রাজা কৃষ্ণচন্ত্র, ধনকুবের জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রাধাবল্লভ, উর্মিচাঁদ, গোবিন্দসিংহ, নন্দনকুমার প্রভৃতি নেতৃবৃন্দআর মুসলমান নেতাদের মধ্যে ছিল মীর জাফর আলী ও ইয়ার লতিফসামরিক ক্ষমতার জোরে ক্লাইভ সিরাজকে পরাজিত করতে পারবেন না তা ভালই জানতেন তিনিকারণ পূর্বের কলকাতার যুদ্ধে সিরাজের জয়লাভ এবং ইংরেজদের পরাজয়ের বা সেই আলি নগরের সন্ধির কথা তাঁর স্মরণ ছিলসুতরাং ষড়যন্ত্র ছাড়া সিরাজকে পরাজিত করা যাবে না ভেবেই পূর্বে উল্লিখিত বঙ্গীয় নেতাদের সঙ্গে শর্ত দেয়া নেয়ার কাজ শেষ করে ফেললেন অর্থাৎ সিরাজের পদচ্যুতির পর কাকে কী দেওয়া হবে, কে কীভাবে কী পরিমাণ লাভবান হবেন সব জানিয়ে দেওয়া হল তাঁদের১৮৫৭ সালের ২৩শে জুলাই পলাশীতে যে যুদ্ধ[?] হয়েছিল সেটা ছিল একটা পুতুলখেলা মাত্রপৃথিবীর ইতিহাসের প্রচারের জোরে এটাকে বিশ্বের বিরাট যুদ্ধ বলে চালালেও তা ছিল ভাঁওতা, কারণ সিরাজের সৈন্য যেখানে এক লাখের উপর আর সেই পরিমাণ কামান গোলাবারুদ, ক্লাইভ সেখানে হাজির হচ্ছেন মাত্র তিন হাজার সৈন্য নিয়েক্লাইভ হলেন বিজয়ী আর ভারত প্রতিনিধি সিরাজউদ্দৌলা হলেন বন্দীকিছুদিনের মধ্যেই নিষ্ঠুরভাবে নিহত হতে হলো সিরাজকে আর ইংলণ্ড প্রাপ্য লর্ডউপাধিতে ভূষিত করলো ক্লাইভকে সেইসঙ্গে চরম বেইমানির পরম পুরস্কার ব্যারনটাইটেলএইবার লর্ড ক্লাইভ হয়ে গেলেন সারা বাংলার গভর্নর১৭৬৭ সাল পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর উন্নতির গতি এত সুক্ষ্ম ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে চলতে লাগলো যে সাধারণ মানুষ টের করতে পারেনি ভারত স্বদেশীর হাত থেকে চলে গেছে বিদেশীর হাতেশান্ত অনুগত তাবেদের সেজে ১৭৬৫-তে দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের দরবারে বার্ষিক ২৬ লক্ষ টকা কর দেবার চুক্তিতে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী পদ আদায় করলো বৃটিশক্রমে মুসলিম রাজত্ব গতি নেয় ধ্বংসের দিকে আর ইংরেজরাজ প্রতিষ্ঠার গতি বৃদ্ধি হতে থাকে দ্রুত ক্লাইভ ইংলন্ডবাসীর পক্ষে মহান মানুষ হলেও নিরপেক্ষ বিশ্ববাসীর চোখে তিনি ছিলেন একজন বড় শোষক ধাপ্পাবাজ ও লুণ্ঠকতিনিই হচ্ছেন ভারতের অর্থনৈতিক পতনের মূল আসামীপূর্বে বর্ণিত বঙ্গীয় নেতাদের ষড়যন্ত্রে তিনি যোগ দিয়েছিলেন, নাকি ক্লাইভের তৈরি ষড়যন্ত্রে ঐ নেতারা যোগ দিয়েছিলেন তা খানিকটা বিতর্কিত ব্যাপারতবে উল্লিখিত ভারতীয় নেতারা প্রত্যেকেই যে নিজের নিজের অর্থনৈতিক পার্থিব স্বার্থে ভারতবর্ষকে বৃটিশের হাতে বিক্রি করার রাস্তা খুলে গেছেন, এ বিষয়ে সবাই একমতনিহত সিরাজের বাড়ি লুঠ করে প্রত্যেক লুণ্ঠকই ভালরকম নগদ মালকড়ি পেয়ে তৃপ্ত হয়েছিলেনতবে একথা সত্য যে ভারতীয় বেইমান দালাল নেতারা যা পেয়েছিলেন তার চেয়ে বহু বেশি ধনরত্ন অর্থ পেয়েছিলেন বৃটিশ নেতারানিরপেক্ষ বিচারে ভারতীয় নেতাদের প্রাপ্তিযোগ সাময়িকভাবে হলেও তারা তা বিদেশে নিয়ে চলে যাননি, কিন্তু বিদেশিরা যা পেয়েছিলেন তার সবটুকুই নিয়ে চলে গিয়েছিলেন স্বদেশ ইংলন্ডেক্লাইভ সেই বাজারে পেয়েছিলেন দু লক্ষ আশি হাজার টাকা আর মীরজাফর ক্লাইভকে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন এক লক্ষ ষাট হাজার টাকাতাছাড়া মেম্বার হিসেবে ক্লাইভ আরো দু লাখ টাকা পেয়েছিলেন আর সেনাপতির যোগ্যতা ও ষড়যন্ত্রের পুরস্কার বাবদ বিশিষ্ট দান পেয়েছিলেন আরো এক লাখ ষাট হাজারএগুলো সব প্রকাশ্য প্রাপ্তিকিন্তু গোপনে যা পেয়েছিলেন তার পরিমাণ সঠিকভাবে বলা মুশকিলতবে যখন তিনি ইংলন্ড চলে গিয়েছিলেন তখন তাঁর মালপত্র জাহাজে ওঠাবার সময় যা দেখা গেছে তা হলো- ধনরত্ন, মণি মানিক্য, সোনা ও রূপোর জিনিষপত্রের জন্য বড় সাইজের ত্রিশটি নৌকা ভর্তি সামগ্রীসেই বিখ্যাত লর্ড ব্যারন কর্ণেল ক্লাইভ দেশে ফিরে গিয়ে হলেন এক বিরাট মামলার আসামী- অপরাধটা শোষণের নয়, যা এনেছিলেন তার থেকে বৃটিশ সরকারকে যা দেবার কথা ছিল তা তিনি দেননি যথাযথ আসামী হওয়ার অপমানে ও ক্ষোভে এই বীর[?] নেতা ১৭৭৪ খৃষ্টাব্দে আত্মহত্যা করেন

স্যার জন অ্যান্সট্রুদার [Sir Jhon Anstruther]

স্যার জন অ্যান্সট্রুদার [Sir Jhon Anstruther] জন্ম ১৭৫৩ তে। এই সাহেব ছিলেন ইংরেজদের দৃষ্টিতে একজন বড়মাপের বুদ্ধিজীবী। ভারতের সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদে ভূষিত করা হয়েছিল তাকে। তিনিও বিচারের নামে ইংরেজ সরকারের অনুকূলেই তাঁর কর্তব্য যথাযথ পালন করে যেতেন তিনি । ওয়ারেন হেস্টিংসের মামলার সময় তিনি ছিলেন একজন এসেসর। পার্লামেন্টের সদস্যও হতে পেরেছিলেন তিনি। কলকাতা হাইককোর্টে তাঁর একটি প্রতিমূর্তি আছে। তিনিও ‘স্যার’ উপাধিপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তিত্ব।

লর্ড মিন্টো [Lord Minto]

লর্ড মিন্টো [Lord Minto]এই খলনায়কের জন্ম হয় ১৭৫১ খৃষ্টাব্দে। ১৮০৭ হতে ১৮১৩ পর্যন্ত তিনি ভারতের বড়লাট হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন । জর্জ এলিয়ট হচ্ছে তাঁর প্রকৃত নাম । ওলন্দাজের অধীনে থাকা জাভা দ্বীপের বার্টাভিয়া শহর দখল করেন লর্ড মিন্টো। এমনকি তিনি অধিকার করতে সক্ষম হলেন কালঞ্জর দূর্গ। বুন্দেলখণ্ডে শান্তিস্থাপনের অভিনয় করে শিখরাজা রনজিৎ সিং এর সঙ্গে সন্ধি করেন তিনি। কিন্তু শিখরা বুঝতে পারেন যে ওটা সন্ধি ছিল না বরং ছিল দূরভিসন্ধি। কোল্হাপুর ও সামন্তবাড়ীর রাজাদের দস্যু সাজিয়ে দস্যু দমনের নাম করে ক্ষমতা চূর্ণ বিচুর্ণ করে দমন করেন তাদের। ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানিকে তাঁর সময়ে নতুন সনদ বা অধিকার প্রদান করা হয়। দেশীয় ভারতীয়দের লেখাপড়া শেখাবার জন্য কোম্পানির পক্ষ হতে এক লাখ টাকা দান, আর খৃষ্টান মিশনারী বা ধর্ম প্রচারকদের সরকারিভাবে সারা ভারতে বিনা বাধায় বা বিনা দ্বিধায় ধর্মপ্রচার মিন্টোর মূল্যবান অবদান। ইংরেজ সরকার তাঁকে লর্ড উপাধি দিতে কার্পণ্য করেননি। ১৮১৪ খৃষ্টাব্দে হয়েছিল তাঁর প্রাণবিয়োগ।

হ্যালহেড [Halhed]

১৭৫১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ছিলেন জাতিগতভাবে একজন ইংরেজ। বাংলায় ছিল তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য। প্রথমে তিনি বাংলা ভাষায় অনেকগুলো পুস্তক পুস্তিকা রচনা করতে সক্ষম হন। তাছাড়া একটি বাংলা ব্যাকরণ লিখেও নজির সৃষ্টি করেন তিনি। হুগলীতে স্থাপনা করেন একটা ছাপখানাও। তাঁর সৃষ্টি করা পুঁথি এবং এদেশের-ই সংগ্রহ করা পুঁথি সবই চালিয়েছেন প্রাচীন পুঁথি বলে। সেগুলো প্রচারের প্রাবল্যে এবং ক্রীত দালালদের দালালিতে মূল্যবান দলিল রূপে সমাদৃত হয়ে বৃটিশ মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে যাতে যুগযুগ ধরে আগামী প্রজণ্মকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানো যায়। এই নিপুণ নায়কের মৃত্যু ঘটে ১৮৩০-এ।

রবিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১২

স্যার চার্লস উইলকিন্স [Sir Charles Wilkins]

স্যার চার্লস উইলকিন্স [Sir Charles Wilkins]। তিনি খ্রিষ্টাব্দ ১৭৫০ এ জন্মগ্রহণ করেন।১৮৩৮ এ হয় তার পরলোক যাত্রা। ইনি ২০ বছর বয়সে বিলেত থেকে ভারতে আসেন । অর্থাৎ ১৭৭০ খৃষ্টাব্দে। তিনি সফল ও সক্ষম হয়েছিলেন ইংরেজদের মধ্যে সংস্কৃত শিক্ষার একটা বিশেষ ষড়যন্ত্র করতে । তিনি একথা রটাতে থাকেন যে, তাঁরাই নাকি উদ্ধার করেছেন আসল ‘দুর্লভ গীতা’। ১৭৮৫ তে ইংলণ্ডে প্রথম ছাপা হয় তাঁর ইংরাজী অনুবাদ। ভারতের নব্যদল এতে অবাক হয়- গীতা এমন এক দামী গ্রন্থ যা কুড়িয়ে পাওয়া হীরের মত। আর তা ইংলণ্ডে গিয়ে হাজির! আমরা তার মর্যাদাই বুঝলাম না। সুতরাং গীতা পড়বার বা জানবার একটা পিপাসা সৃষ্টি করতে বৃটিশ সরকার সক্ষম হয় ভালভাবে । স্যার উইলকিন্স ১৭৭৯ খৃষ্টাব্দে সৃষ্টি করেন সংস্কৃত ব্যাকরণ। কিন্তু ব্যাকরণটা যদিও ‘ব্যাকরণ’ হয়নি তবুও ব্যাকরণ রচনা হয়েছে- এটাই একটা নতুন পদক্ষেপ। বাংলা ও পার্শী ভাষায় টাইপ তৈরি করেছিলেন। একটি গবেষণাগার তৈরির প্রয়োজন হয় যাতে থাকবে অনেক বই পুস্তক, মুদ্রা, পুঁথি প্রভৃতি আর প্রত্নত্ত্বের তথ্য। সেইজন্য ভারতের কলকাতায় তৈরি হয় ‘ এশিয়াটিক সোসাইটি’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। যেটি পূর্বেই প্রতিষ্ঠা করে গেছেন বিচারপতি স্যার্ জোনস ১৭৮৪-তে। এইসব প্রচারের জন্য একটি পত্রিকা প্রয়োজন হয় । তাই ‘এশিয়াটিক রিসার্চেস’ নামে একটি পত্রিকারও সৃষ্টি হয়ে গেল সহজেই। ১৭৮৬ তে তাঁর দায়িত্ব পালন করে স্বদেশে ফিরে গেলেন তিনি। দেশে ফিরে একদল ইংরেজ পণ্ডিত নিয়ে ২২ বছর গবেষণা করে প্রকাশ করলেন আবার একটি সংস্কৃত ব্যাকরণ। দেখা গেল প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাকরণের মধ্যে কোন মিল নেই!